আমাদের সবার ঘরেই ফ্যান আছে, তাই আমরা সবাই এটাকে চিনি। এই চেনা জিনিস নিয়ে আবার মূল রচনা লেখার কি আছে? আছে, এই চেনা জিনিসটির অচেনা কথা বলার জন্যই এবারের মূল রচনা লেখা হয়েছে গরমের সময় উপকারী এই যন্ত্রটি।
প্রথমেই ফ্যানের একটা হালকা বর্ণনা দেই। এর মাঝের যে গোল অংশটা থাকে, তাকে বলে মোটর। এটাই হচ্ছে ফ্যানের সবথেকে কার্যকরী অংশ। এটাই ইলেকট্রিসিটির সাহায্যে অনবরত ঘুরতে পারে। তবে শুধু এটা ঘুরলেই বাতাস হবে না, তার জন্য দরকার ব্লেড। ব্লেড নাম শুনে ভয় পেয় না, এটা অতটা ধারালো না। প্রকারভেদে ফ্যানে এক থেকে ছয়টা ব্লেড থাকে। আমরা সাধারনত তিন থেকে চার ব্লেডের ফ্যান বেশি দেখে থাকি। আর একটা অংশ হচ্ছে রড। এটি ছাদ থেকে ফ্যানটাকে ঝুলতে সাহায্য করে।
প্রথমেই ফ্যানের একটা হালকা বর্ণনা দেই। এর মাঝের যে গোল অংশটা থাকে, তাকে বলে মোটর। এটাই হচ্ছে ফ্যানের সবথেকে কার্যকরী অংশ। এটাই ইলেকট্রিসিটির সাহায্যে অনবরত ঘুরতে পারে। তবে শুধু এটা ঘুরলেই বাতাস হবে না, তার জন্য দরকার ব্লেড। ব্লেড নাম শুনে ভয় পেয় না, এটা অতটা ধারালো না। প্রকারভেদে ফ্যানে এক থেকে ছয়টা ব্লেড থাকে। আমরা সাধারনত তিন থেকে চার ব্লেডের ফ্যান বেশি দেখে থাকি। আর একটা অংশ হচ্ছে রড। এটি ছাদ থেকে ফ্যানটাকে ঝুলতে সাহায্য করে।
এবার বলি ফ্যানের জন্মকথা। এই যান্ত্রিক পাখার জন্ম সুদূর আমেরিকায়, ১৮৬০-এর দশকে। তবে তখন বিদ্যুতের মাধ্যমে পাখা ঘুরতো না, পানি দিয়ে সেটা চলতো। ভাবছো পানি দিয়ে বড়জোর পাখা ধোয়ামোছা করা যাবে, কিন্তু সেটা দিয়ে ফ্যান চালানো সম্ভব কিভাবে? খুব সম্ভব। পানির স্রোতটাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজটি করা হত। একই পানির স্রোতকে কাজে লাগিয়ে অনেকগুলো ফ্যান ঘুরানো যেত বলে সে সময় এটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে খরচ একটু বেশি ছিল বলে শুধুমাত্র অফিস-আদালত, রেস্টুরেন্ট-এসব জায়গায় এটি ব্যবহার করা হতো। এরপর এলো বিদ্যুৎচালিত ফ্যান, ১৮৮২ সালে। এটি আবিষ্কার করেন ফিলিপ ডিহল নামের এক উদ্ভাবক। তখন সবাই ফ্যানকে তার নামেই নামকরণ করে। সহজেই চালানো যায় এবং খরচে সাশ্রয়ী বলে এটি বেশ তাড়াতাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠে। তবে এখনো আমেরিকার দক্ষিণ দিকের কিছু কিছু এলাকায় এখনো সেই প্রাচীনকালের ফ্যান পাওয়া যায়।
তখন দুই ব্লেডের ফ্যান বেশি জনপ্রিয় ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে চার ব্লেডের ফ্যানের প্রচলন শুরু হয়। আর সেই সময়েই প্রথম আমেরিকা থেকে বাইরের বিশ্বে ফ্যান বাজারজাত করা হয়। সারা বিশ্ব হয়ে যায় ফ্যানের ফ্যান!!
এখন বলি যান্ত্রিক পাখা কিভাবে কাজ করে। প্রথমে ইলেকট্রিসিটির মাধ্যমে এর মোটরটি ঘোরা শুরু করে। মোটরটি ঘুরলে এরসঙ্গে ব্লেড বা পাখাগুলোও ঘুরতে থাকে। এখন কথা হচ্ছে, বাতাসটা আসে কেন? ফ্যান কি বাতাস তৈরি করে? এর কোথা থেকে বাতাস বের হয়?
না, ফ্যান মোটেই বাতাস তৈরি করতে পারে না। তোমরা হয়তো জানো, পুরো পৃথিবীটা বাতাসে ভরা, তাই আমরা বেঁচে আছি। তো, তোমার ঘরটাও বাতাসে পরিপূর্ণ। ফ্যান শুধু তার পাখাগুলো দিয়ে বাতাসটাকে একটু নেড়ে দেয়। স্থির বাতাস তখন নড়তে শুরু করে, আর আমাদের গায়ে বাতাস লাগে।
না, ফ্যান মোটেই বাতাস তৈরি করতে পারে না। তোমরা হয়তো জানো, পুরো পৃথিবীটা বাতাসে ভরা, তাই আমরা বেঁচে আছি। তো, তোমার ঘরটাও বাতাসে পরিপূর্ণ। ফ্যান শুধু তার পাখাগুলো দিয়ে বাতাসটাকে একটু নেড়ে দেয়। স্থির বাতাস তখন নড়তে শুরু করে, আর আমাদের গায়ে বাতাস লাগে।
পৃথিবীতে কয়েক প্রকার ফ্যান পাওয়া যায়। সবথেকে জনপ্রিয় হচ্ছে সিলিং ফ্যান। এছাড়াও আছে টেবিল ফ্যান। এটি বেশ সহজে বহনযোগ্য। জিনিসটা তোমরা চেন, নতুন করে চেনানোর কিছু নেই। এরসঙ্গে সিলিং ফ্যানের মূল পার্থক্য হচ্ছে এর আকারে। আর এটি ছাদে ঝুলিয়ে রাখার দরকার হয় না, টেবিলে কিংবা সোকেজের উপরে রেখে বাতাস খাওয়া যায়। আর সিলিং ফ্যানের থাকে রেগুলেটর, যেটা দিয়ে সহজেই ফ্যানের ঘূর্ণনগতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অন্যদিকে টেবিল ফ্যানের থাকে সুইচ (কখনো কখনো দড়িও দেখা যায়)- যেটা দিয়ে পাখার গতি বাড়ানো-কমানো যায়, এতে করে বাতাসটাও বেশ আয়ত্বে রাখা যায়।
আরেকপদের ফ্যান হচ্ছে চাইনিজ ফ্যান। এটা আসলে হাতপাখা। এটা চালাতে কোন বিদ্যুতের দরকার হয় না। হাতটা মাথার এদিক-ওদিক ঘুরালেই পাওয়া যায় বাতাস। চীন-জাপানে এধরনের পাখার প্রচলন বেশি। সে দেশের মেয়েরা এটাকে গরমের হাত থেকে বাঁচার চেয়েও বেশি কদর করে অন্য কারণে, এটা হচ্ছে তাদের ফ্যাশনের অংশ। সেই প্রাচীনকাল থেকেই তারা এই ফ্যান ব্যবহার করে আসছে। কয়েকটি কাঠির সঙ্গে কাপড় কিংবা কাগজ জোড়া দিয়ে এই পাখা তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে পাখাটিকে বেশ বর্ণিলভাবে সাজানো হয়। আঁকা থাকে নানারকম ছবি-নকশা। নকশার মধ্যে বেশি কদর হচ্ছে বিভিন্ন ফুল এবং ড্রাগনের। ড্রাগনের নাম শুনে ভয় পেও না, কেননা এই ড্রাগন আগুনের হলকার বদলে দেবে মিষ্টি সুশীতল বাতাস।
এই লেখাটা পড়তে পড়তে হয়তো কয়েকবার লোডশেডিং হয়েছে। তখন আরো একবার নিশ্চই বুঝেছ ফ্যানের কদর। তবে আধুনিক যুগে ফ্যান তার জায়গা হারাচ্ছে এয়ার কন্ডিশনারের কাছে। কিন্তু যাই হোক, ইলেকট্রিসিটি চলে গেলে তখন কিন্তু হাতপাখাই ভরসা। আর হাতপাখা ধারেকাছে না পেলে সমস্যা কি- বই কিংবা পত্রিকা আছে না!
লেখাটি পুর্বে কিডজ.বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকমে প্রকাশিত
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন